
একজন ভাগ্নীর নিবেদন
“প্রযত্নে, বেবী সিদ্দিকী”—শুধু একটি চিঠি নয়, এটি এক প্রজন্মের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও স্মৃতির দলিল।
লায়লা আরিয়ানী হোসেনের এই খোলা চিঠি যেন মনে করিয়ে দেয়,
কিছু মানুষ চলে গেলেও থেকে যান, ভালোবাসার সবচেয়ে গভীর জায়গায়।
বেবী সিদ্দিকী—একটি নাম, যার পরিসর বিশাল আকাশের মতো। একজন মানুষ, যিনি আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ হলেও তাঁর মধ্যে ছিল অসাধারণ মানবিকতার আলো। তাঁর স্নেহছায়ায় যে থেকেছে, সেই জানে—কতটা প্রশান্তি, নিরাপত্তা ও ভালোবাসা লুকিয়ে ছিল সেই উপস্থিতিতে।
সম্প্রতি তাঁর ভাগ্নী লায়লা আরিয়ানী হোসেন, বাংলাদেশ বেতারের উপস্থাপিকা, লেখিকা ও উদ্যোক্তা, নিজের সামাজিক মাধ্যমে “প্রযত্নে, বেবী সিদ্দিকী” শিরোনামে এক খোলা চিঠি লিখে প্রকাশ করেছেন। চিঠিটি এখন নেটিজেনদের হৃদয়ে নাড়া দিচ্ছে।
“আমি বেবী সিদ্দিকীর ভাগ্নী—এই পরিচয়ই আমার চিরদিনের ঠিকানা”
লায়লা লিখেছেন,
“আমার ঠিকানা এটাই থাকবে সবসময়। আমার পরিচয়ও তাই, বেবী সিদ্দিকীর ভাগ্নী। তাঁর স্নেহ, ভালোবাসা, মমতা আমার জীবনের বড় আশ্রয় ছিল।”
তিনি জানান, সময়ের সাথে অনেক কিছু ঠিক হয়ে যায়, কিন্তু কিছু ব্যথা মুছে যায় না। তাঁর ভাষায়,
“কিছু কষ্ট গিলে হাসতে হয়, মেনে নিতে না পারা কিছু সত্য হজম করতে করতে জীবন এগিয়ে যায়। কেন আমার বেবী মামাকে সবার আগে যেতে হলো?”
লায়লা লিখেছেন,
“অক্টোবর এমন এক মাস, যে মাসের জন্য একসময় অপেক্ষা করতাম, এখন পালাতে মন চায়। ৭ অক্টোবর ছোটো মামা, ৮ অক্টোবর বেবী মামা, ২৬ অক্টোবর ২০১৭-তে আম্মু আর ২০১০ সালে বেনু খালাম্মু। পরিবারের আরও অনেকে হারিয়ে গেছেন এই মাসেই।”
তিনি আরও লিখেছেন,
“সব বিষয়ে সান্তনা চলে না, কিছু হারানো স্থায়ী হয়ে থাকে। তবুও সাহস রাখতে হয়, কারণ আমি বেবী সিদ্দিকীর ভাগ্নী।”
একজন দানশীল, নির্লোভ মানুষ
চিঠিতে বেবী সিদ্দিকীর চরিত্রের বর্ণনা দিতে গিয়ে লায়লা বলেন,
“তিনি ছিলেন সিংহ হৃদয়ের মানুষ। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে সমানভাবে ভালোবাসতেন। সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস, রাজনীতি—সব বিষয়ে অগাধ জ্ঞান ছিল তাঁর, কিন্তু কখনো গর্ব করেননি।”
“Giving makes us happy—এই দর্শনকে তিনি জীবন দিয়ে মেনে চলতেন। নিজের যা ছিল, উদার হাতে বিলিয়ে দিতেন সমাজ ও পরিবারের সবার মাঝে।”
অপূরণীয় শূন্যতা ও অনন্ত স্মৃতি
লায়লা আবেগভরে লেখেন,
“আর কিছু আমাকে এতটা বিষণ্ণ করেনা, যতটা করে তাঁর না থাকা। মাঝে মাঝে নিজেকে অন্ধকারে বন্দী মনে হয়। আলো নেই, ছায়াও নেই। শুধু এক শূন্যতা।”
“আমার জানা Best Human আমার স্মৃতিতেই থাকেন। কেউ তার মতো করে এসে বলবে না—‘চল, গরম রসমালাই খেয়ে আসি, তারপর রাগ করিস।’”
শেষে তিনি লিখেছেন,
“It’s hard to live with the feeling of missing someone, but it’s good to feel I have someone special to remember deeply every day… Nothing can ever take away a love the heart holds.”
একজন ভাগ্নীর নিবেদন
“প্রযত্নে, বেবী সিদ্দিকী”—শুধু একটি চিঠি নয়, এটি এক প্রজন্মের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও স্মৃতির দলিল।
লায়লা আরিয়ানী হোসেনের এই খোলা চিঠি যেন মনে করিয়ে দেয়,
কিছু মানুষ চলে গেলেও থেকে যান, ভালোবাসার সবচেয়ে গভীর জায়গায়।